🎬 সিনেমাঃ ভবিষ্যতের ভূত (২০১৯)
🔰 পরিচালকঃ অনীক দত্ত
🔰 অভিনয়েঃ পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, বরুণ চন্দ, মুনমুন সেন, খরাজ মুখোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, সুমন্ত মুখার্জি
🔰 দৈর্ঘ্যঃ ২ ঘন্টা ১১ মিনিট
🔰 আইএমডিবিঃ ৭.৫
“ভবিষ্যতের ভূত” অনীক দত্ত পরিচালিত একটি ব্যঙ্গাত্মক চলচিত্র। যিনি এর আগে উপহার দিয়েছিলেন “ভূতের ভবিষ্যৎ” এর মত অসাধারণ সিনেমা। তবে এটি কোন সিকুয়েল নয়। ২টি সিনেমার বিষয়বস্তুর মিল থাকলেও ২ টি সিনেমাই স্বতন্ত্র।
🔴 রিভিউর শুরুতে এই সিনেমা নিয়ে কিছু কথা না বললেই নয়।
সিনেমাটি সেন্সর পাওয়ার পর ২০১৯ এর ১৫ই ফেব্রুয়ারী প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। কিন্তু একদিন না পেরুতেই পুলিশি বাধায় প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর সিনেমাটির প্রযোজক হল মালিকদের কাছে লিখিতভাবে সিনেমাটির প্রদর্শন বন্ধ হবার কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন উপর মহলের চাপে সিনেমাটি বন্ধ রাখা হয়েছে৷
ফলে সিনেমার কলাকুশলী সহ অন্যান্য অভিনেতা-অভিনেত্রীরা এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে প্রায় সকলেই এর প্রতিবাদে অংশ নেন।
পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের নির্দেশ প্রদান করে। একই সাথে রাজ্য সরকার কে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০ লক্ষ টাকা প্রদান করতে বলা হয়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান।
⭕কাহিনীঃ সিনেমাটিতে মূলত বর্তমান রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার নানা অসঙ্গতি ব্যঙ্গাত্মক ও সরাসরি ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। কি নেই এখানে?
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অপকর্ম। ক্ষমতার অপব্যবহার। হলুদ সাংবাদিকতা, পেটোয়া বাহিনী হিসেবে পুলিশ, ধর্মান্ধতা, সোশ্যাল মিডিয়ার বাজে দিক, সংস্কৃতির অবক্ষয়, শ্রেণি বৈষম্য সহ প্রায় প্রতিটা বিষয় কোন না কোন ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই সিনেমায়।
✅পরিচালনাঃ অনীক দত্তের পূর্বের সিনেমা “ভূতের ভবিষ্যৎ” যারা দেখেছেন তারা খুব ভালো ভাবেই জানেন তার কাজ সম্পর্কে৷ আর যারা সিনেমাটি এখনো দেখেননি তাদের বলব অবশ্যই দেখুন।
ভবিষ্যতের ভূত সিনেমাতেও অনীক দত্ত তার কাজের ছাপ রেখেছেন নিখুঁতভাবে৷
✅অভিনয়ঃ এই সিনেমায় বেশ কিছু প্রবীণ অভিনেতা সহ অনেক গুণী অভিনেতা রয়েছেন। সিনেমার গল্প অনুযায়ী ইন্ডিভিজুয়াল স্ক্রিন টাইম তত বেশী না৷ কয়েকটা চরিত্র বাদে। তবে অল্প স্ক্রিন টাইমেও দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন সবাই৷
✅চিত্রনাট্যঃ সিনেমার চিত্রনাট্যে পরিচালক অনীক দত্তের সাথে ছিলেন উৎসব মুখার্জি।সিনেমাটি যেহেতু একটি ব্যঙ্গাত্মক প্রকাশ তাই এর চিত্রনাট্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় অসংখ্য ডায়লগের মাঝেই সরাসরি কিংবা মেটাফোরিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে সমাজের নানা অসঙ্গতি ও সমস্যা৷ পাশাপাশি প্রায় প্রতিটা সংলাপেই রয়েছে হাস্যরস কিংবা অন্য কোন উপাদান৷
✅সঙ্গীতঃ সিনেমাটির আবহ সঙ্গীত ও গানগুলো ছিল এক কথায় একেকটি মহাকাব্য৷ বিশেষ করে শুরুতেই “ভবিষ্যতের ভূত” ও “উন্নয়নের গান” শিরোনামে গান ২ টি ছিল অভূতপূর্ব। প্রতিটা শব্দই ছিল অর্থবহ। সবমিলিয়ে সঙ্গীত ছিল খুবই শ্রুতিমধুর।
সবমিলিয়ে নিঃসন্দেহে বাংলা সিনেমায় আরো একটি সোনার পালক। অসাধারণ উপভোগ করেছি। অনেকদিন অপেক্ষায় ছিলাম সিনেমাটির জন্য৷
তাই প্রত্যেককেই সিনেমাটি দেখার আমন্ত্রণ রইলো।
ভেরি হ্যাপি ওয়াচিং ❤