রামধনু (২০১৪) মুভি রিভিউ

মা, আমি পারলাম না, তোমাকে খুশি করতে পারলাম না।

একটি সুইসাইড নোট*

এইতো কদিন আগেই এস এস সি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হলো৷ তার পরবর্তী ২/৩ দিনে ঝড়ে গেলো বেশ কতগুলো তাজা প্রাণ! পরীক্ষায় ফেল করার পরিবার ও সমাজের প্রচলিত কটাক্ষ-বানে জর্জরিত কিংবা এই কটাক্ষ থেকে নিজেকে মুক্তি দিতেই তারা বেছে নিয়েছিল এ পথ।

এঘটনা ২০২০ সালে এসে নতুন নয়। প্রতি বছর নানা গ্রেডের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর দেখতে ও শুনতে হয় এসব খবর। এই ধারার পরিবর্তন অত্যাবশক৷ সামান্য পরীক্ষার ফলাফল দিয়ে একটা জীবনকে (শিক্ষার্থী) মূল্যায়ন করা যায়না।

এবার আসল কথায় আসি। ২০১৪ সালে শিবপ্রসাদ ও নন্দিতা রায় শিশুদের নিয়ে নির্মাণ করেন শিক্ষামূলক একটি সিনেমা রামধনু (Ramdhanu: The Rainbow). শিশুদের নিয়ে নির্মিত হলেও সিনেমাটা মূলত বড়দের জন্য। বিশেষত বাবা-মায়ের জন্য৷ কেননা বাবা-মা ই সন্তানের মানসিক বিকাশ ও প্রাথমিক পড়াশোনা ও মেধা মনন তৈরিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷

বাচ্চারা আসলে স্পঞ্জের (ফোম) মত। যা দেখে শুষে নেয়৷ একটা বাচ্চার যখন মানসিক ও চিন্তা শক্তির বিকাশ শুরু হয় তখন সে চারপাশের ঘটে চলা বিভিন্ন বিষয় দেখেই শিখতে শুরু করে। তাই পরিবার-সমাজ-বিদ্যালয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের বর্তমান সমাজে প্রচলিত একটি কথা হচ্ছে, ভালো স্কুলে ভর্তি না হলে ভালো রেজাল্ট হবেনা, ভালো রেজাল্ট না হলে ভালো কলেজে ভর্তি হওয়া যাবেনা, ভালো কলেজে ভর্তি হতে না পারলে ভালো ভার্সিটি তে সুযোগ পাওয়া যাবেনা। ভালো ভার্সিটি থেকে পাশ করতে না পারলে ভালো চাকুরী পাওয়া যাবেনা, আর ভালো চাকুরী না পেলে ভালো আয় হবেনা। ফলাফল দাড়াবে “জীবনটাই বৃথা”।

আসলে বর্তমানে পড়াশোনা টা একটা বাণিজ্য হয়ে গেছে। আর পড়াশোনা করাও হয় টাকা আয় করার জন্য। শেখার জন্য নয়৷ তাই এই সামাজিক মানসিকতার দ্রুত পরিবর্তন খুবই জরুরি।

কাহিনি সংক্ষেপঃ লাল্টু দত্ত ও মিতালি দত্তের ৫ বছর বয়সী একমাত্র সন্তান গুগুল। মিতালি দত্ত গুগুলকে নিয়ে মহা দুঃশ্চিন্তায় আছেন। তার ছেলে এবারো সমানধন্য কোন স্কুলে ভর্তি হতে পারেনি। এদিকে মিতালি দত্ত হাল ছাড়বার পাত্রী নন। যেভাবেই হোক গুগুলকে সনামধন্য কোন স্কুলে ভর্তি করাতেই হবে৷ তা সে যে করেই হোক না কেন! এদিকে লাল্টু দত্ত বউয়ের কথা মত উপার্জিত সকল সঞ্চয় ডোনেশন (ঘুষ) বাবদ ব্যায় করে হলেও ছেলেকে ভর্তি করাতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু গুগুল আকাশ ভালোবাসে, আকাশে উড়তে থাকা ঘুরি ভালোবাসে, সে ঠাকুমার কাছে দৈত্য দানবের গল্প শুনতে ভালোবাসে, দাদুর সাথে জলে ছিপ ফেলে মাছ ধরতে ভালোবাসে। কিন্তু গুগুল কি পারবে তার মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে?

জানতে হলে সিনেমাটি দেখুন।

  • পরিচালনাঃ শিবপ্রসাদ মুখার্জি ও নন্দিতা রায়ের পরিচালনা ও নির্মাণ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই৷ বরাবরের মতো এখানেও তারা তাদের কাজের মান অব্যাহত রেখেছেন।
  • অভিনয়ঃ অভিনয়ে লাল্টু দত্তের চরিত্রে পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখার্জি নিজেই অভিনয় করেছেন। মিতালি দত্তের চরিত্রে ছিলেন গার্গি রায় চৌধুরী। মূল এই ২ টি চরিত্রে খুব ভালো অভিনয় করেছেন দু’জন। গুগুল চরিত্রে দারুণ অভিনয় করেছে আকাশনীল মিত্র। এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে রচনা ব্যানার্জি, খরাজ মুখার্জীসহ অন্যরাও জুতসই অভিনয় করেছেন।

সবমিলিয়ে দারুণ শিক্ষামূলক একটি সিনেমা। তাই বলে বিনোদনের অভাব নেই৷ সিনেমাটি যথেষ্ট ড্রামাটিক ও কমেডি উপাদানে ভরপুর

হ্যাপি ওয়াচিং

ট্রেইলার

সিনেমাটি ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন নিচের বাটনে।

Share on

খাদ মুভি রিভিউ

🎬 মুভিঃ খাদ (এডভেঞ্চার)⭕ পরিচালকঃ কৌশিক গাঙ্গুলি⭕ অভিনয়েঃ পল্লবী চ্যাটার্জি, অর্ধেন্দু ব্যানার্জী, মিমি চক্রবর্তী, রুদ্রনীল

Read More »